Magic Lanthon

               

ম্যাজিক লণ্ঠন ডেস্ক

প্রকাশিত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:০০ মিনিট

অন্যকে জানাতে পারেন:

যুদ্ধ ও নারীকে নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ট্রয়

ম্যাজিক লণ্ঠন ডেস্ক


সিনেমার নাম : ট্রয়

পরিচালক : য়োল্ফগং পিটারসন

নির্মাণকাল : ২০০৪ সাল, আমেরিকা

সম্পাদনা : পিটার হন্স

সঙ্গীত পরিচালনা : জেমস হরনার

চিত্রগ্রহণ : রজার প্র্যাট

প্রযোজনা : য়োল্ফগং পিটারসন, ডায়না রাথবান, কলিন উইলসন

ব্যাপ্তি : দুই ঘন্টা ৪৩ মিনিট

 

যুদ্ধের কেন্দ্রে ছিলেন এক নারী।  তা চলেছিল একটানা নয় বছর।  সেই যুদ্ধ এবং সেই নারীকে নির্মিত চলচ্চিত্র ট্রয়।  যার মূল উপজীব্য গ্রীক পুরাণ।  সিনেমায় প্রবেশের পূর্বে জানা দরকার কাহিনীর প্রেক্ষাপট।

স্পার্টার রাজা টিনডারেউস এবং স্ত্রী লেডার।  তাদের চার সন্তান।  দুই ছেলে ক্যাস্টর ও পলিডিউসেস এবং মেয়ে ক্লাইটেমেনেস্ত্রা ও হেলেন।  ক্লাইটেমেনেস্ত্রা বিয়ে করেন রাজপুত্র এগামেমননকে।  আর হেলেন বিয়ে করেন এগামেমননের ভাই মেনেলাউসকে।  বৃদ্ধ রাজা টিনডারেউস জামাতা মেনেলাউসের কাছে স্পার্টার শাসনভার ছেড়ে দেন।

দূরে এজিয়ান সাগরের ওপারে ট্রয়।  এর রাজা প্রায়াম, রানী হেকুবা ও জ্যেষ্ঠ রাজপুত্র হেক্টর।  দ্বিতীয় পুত্রের জন্মের পর হেকুবা স্বপ্নে দেখেন শিশুটি একটি জ্বলন্ত অগ্নিশিখা আনতে যাচ্ছে, যে শিখা জ্বালিয়ে দেবে ট্রয়। সম্ভাব্য দুর্ভাগ্য এড়াতে রাজা প্রায়াম শিশুটিকে হত্যা না করে আইডা পর্বতে রেখে আসেন।  এক রাখাল কুড়িয়ে পায় শিশুটিকে, লালন করে, নাম রাখে প্যারিস।

প্যারিস যখন টগবগে যুবক তখন মার্মিডনসের রাজা পেলেউস ও সমুদ্রদেবী থেটিস এর বিয়েতে যুদ্ধদেবী এরিস ছাড়া সবাই আমন্ত্রিত হয়।  দেবতাদের পিতা জিউস, তার স্ত্রী হেরা, জ্ঞানদেবী অ্যাথিনা, প্রেম ও সৌন্দর্যের দেবী আফ্রোদিতি বিয়েতে উপস্থিত হন।  সংকটের শুরু এখান থেকেই।

বিয়েতে নিমন্ত্রণ না পেয়ে ক্ষুব্ধ হন যুদ্ধদেবী এরিস।  হেরা, অ্যাথিনা ও আফ্রোদিতির মধ্যে প্রতিহিংসা সৃষ্টির লক্ষ্যে কৌশলে তাদের খাবার টেবিলে নিক্ষেপ করেন একটি সোনালী আপেল।  সোনালী আপেলের গায়ে লেখা ‘সুন্দরতম রমনীর জন্য’।

সৌন্দর্যে শ্রেষ্ঠত্বের গৌরব কেউ ছাড়তে রাজি নয়, তাই তিনজনেরই দাবি আপেলটির।  তাদের কলহ মেটাতে পিতা জিউস বার্তাদুত আইরিশকে বললেন, আপেলটি রাখাল প্যারিসকে দিতে।  প্যারিসের বিবেচনায় যে সুন্দরী শ্রেষ্ঠা, তাকেই যেন তিনি আপেলটি হস্তান্তর করেন।

আইডার পাদদেশে মেষ চরাচ্ছে প্যারিস; তিন দেবী আবির্ভূত।  হেরা বললেন, আমি তোমাকে সবচেয়ে ধনী ও ক্ষমতাশালী রাজা বানিয়ে দেব।  অ্যাথিনা বললেন, আমি তোমাকে সবচেয়ে জ্ঞানী ও খ্যাতিমান মানুষে পরিণত করব। স্মিত হেসে অ্যাফ্রোদিতি বললেন, আমি তোমাকে দেব পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী নারী, যে তোমার স্ত্রী হবে।

সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করলেন না প্যারিস।  তার চাই শ্রেষ্ঠ সুন্দরী নারী।  আপেল পেলেন আফ্রোদিতি।  সন্তুষ্ট দেবী আফ্রোদিতি প্যারিসের জন্য বরাদ্দ করলেন স্পার্টার রানী হেলেনকে।

দেবীদের সুন্দরী বিবেচনায় এটিই ছিল ‘প্যারিসের ন্যায়-বিচার’, যা সর্বত্র বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল ট্রয়ের যুদ্ধের প্রকৃত কারণ হিসেবে।  ট্রয় ২০০৫ সালে অস্কারের জন্য মনোনিত হয় এবং ঐ বছরে এএসসিএপি ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন মিউজিক অ্যাওয়ার্ড লাভ করে।


অভিনয় :  ব্র্যাড পিট, এরিক বানা, ডায়না ক্রুগার, অরলান্ডো ব্লুম, ব্রায়ান কক্স, পিটার ও ট্রলি, সিন বিন, রোজ ব্রেভি, ব্লেন্ডাস গ্লিসন, সাফ্রান ব্রুস প্রমুখ।


য়োল্ফগং পিটারসন ও তার সিনেমা : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৪১ সালের ১৪ মার্চ জার্মানীর লোয়ার স্যাক্সোনির ইমডনে জন্মগ্রহণ করেন পিটারসন। ১৯৫৩ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত লেখাপড়া করেন হামবার্গের স্কুলে। ১৯৬০ সালে হামবার্গে এবং পরবর্তীতে বার্লিনে থিয়েটার বিষয়ে প্রাতিষ্ঠনিক শিক্ষা লাভ করেন। এরপর পিটারসন যোগ দেন বার্লিনের ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন একাডেমিতে। ১৯৭৭ সালে তিনি নির্মাণ করেন প্রথম চলচ্চিত্র Die konsequenz সিনেমাটি জার্মানীর একটি টেলিভিশনের জন্য নির্মিত হয়েছিল।

তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো, Das boot (1981), The never ending story (1984), Enemy mine (1985), Out break (1995), In the line of fire (1993), Air force one (1997), The perfect storm (2000), Poseidon (2006)|

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন