পপি সরদার
প্রকাশিত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:০০ মিনিট
অন্যকে জানাতে পারেন:
চিনা চলচ্চিত্রশিল্পের সূতিকাগার বি এফ এ
পপি সরদার

চিনা চলচ্চিত্রের কথা উঠলেই চোখের সামনে অদ্ভুত শারীরিক কসরতের মাধ্যমে মারামারির দৃশ্য ফুটে ওঠে। যেটাকে বলা হয় মার্শাল আর্ট। পশ্চিমা চলচ্চিত্রে তারকা হয়ে উঠতে অভিনয় দক্ষতা ও শারীরিক গঠনের গুরুত্ব থাকলেও চিনাদের কাছে মার্শাল আর্টে দক্ষতাই অধিক গুরুত্বপূর্ণ। তবে হতাশার কথা হলো, অ্যাকশন-কুংফু-কারাতেধর্মী চলচ্চিত্র শুরু থেকে চিনসহ সারাবিশ্বে তুমুল সাড়া ফেললেও গত দুই দশকে তাদের চলচ্চিত্র ব্যবসায় ভাটা পড়তে শুরু করে। কারণ হলিউড ও বলিউডের রোমান্টিক ও কমেডিধর্মী চলচ্চিত্রের আকর্ষণে চিনা দর্শকরা নিজেদের চলচ্চিত্র থেকে অনেকটা মুখ ফিরিয়ে নেয়। ফলে যেটা হয়, চিনা নির্মাতারাও দর্শকের চাহিদা মতো চলচ্চিত্র-নির্মাণ শুরু করে। কিন্তু চিনের অভ্যন্তরীণ বাজার ও বহির্বিশ্বের কাছে তা আকর্ষণীয় হয়ে ওঠেনি। আর এই সুযোগে চিনের চলচ্চিত্র বাজার দখল করে নেয় হলিউড ও বলিউডি চলচ্চিত্র।
মজার ব্যাপার হলো, বর্তমানে চিনা চলচ্চিত্র বাজারের এক-তৃতীয়াংশই দখল করে আছে হলিউড ও বলিউডের চলচ্চিত্র। একই সঙ্গে সারাবিশ্বে চিনা চলচ্চিত্র মনে করে আমরা যেসব চলচ্চিত্র দেখি, তার অধিকাংশই নির্মাণ হয় হলিউডে। যেখানে চিনা অভিনয়শিল্পীরা কেবল অভিনয় করে থাকেন। তার পরও চিনা সংস্কৃতি ও জীবনধারা নিয়ে যেসব চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়, তাও ভাষার কারণে বাইরের দর্শক অনেকটাই আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসেবে চিন পৃথিবীর মানচিত্র ও অর্থনীতিতে প্রথম সারিতে থাকলেও চলচ্চিত্রের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে তারা দীর্ঘদিন তেমন কোনো অবদান রাখতে পারেনি। অথচ লুমিয়ের ভাইয়েরা যখন সারাবিশ্বে নিজেদের চলচ্চিত্র প্রদর্শন শুরু করে, ঠিক তার এক বছরের মাথায় চিনেও তার প্রদর্শনী হয়। ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দের ১১ আগস্ট স্পেনিয় ব্যবসায়ী আন্তোনিও রামোস-এর হাত ধরে চিনের সাংহাই প্রদেশের সেই প্রদর্শনী হয় একটি জু গার্ডেন টি হাউসে। এরপর চিনে চলচ্চিত্র বেশ দর্শকপ্রিয়তাও পায়। তখন বাইরের দেশ থেকে, বিশেষ করে ফ্রান্সের চলচ্চিত্র এনে চিনা দর্শকের বিনোদন চাহিদা মেটানো হতো।
১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে এসে নির্মাণ হয় প্রথম চিনা চলচ্চিত্র দ্য ব্যাটল অব ডিংজুনশান (The Battle of Dingjunshan)। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে চিনের নিজস্ব উদ্যোগে ‘মিং শিং’ প্রযোজনা সংস্থা প্রতিষ্ঠা হয়। ‘মিং শিং’-এর সাফল্যে ওই দশকেই চিনে গড়ে ওঠে প্রায় একশো ৮০টির মতো ছোটো-বড়ো স্টুডিও। শুধু তা-ই নয়, বিশ্ব চলচ্চিত্র নির্বাক থেকে সবাক যুগে প্রবেশের সময় চিনও সবাকে প্রবেশ করে। চিনের প্রথম সবাক চলচ্চিত্র সিঙ-সঙ গার্ল রেড পনি (১৯৩১)। কিন্তু তার পরও বিভিন্ন কারণে চিনা চলচ্চিত্রশিল্প ঠিক দাঁড়াতে পারেনি। একসময় চলচ্চিত্রশিল্পের গুরুত্ব অনুধাবন করে এ মাধ্যমটির উন্নয়নে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে চিনে প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘বেইজিং ফিল্ম অ্যাকাডেমি’। এরপর এই ফিল্ম অ্যাকাডেমির হাত ধরেই একের পর এক উঠে আসে চিনের বিখ্যাত সব চলচ্চিত্রনির্মাতা। কিন্তু বিশ্ব চলচ্চিত্র বাজারে এখনো মলিন চিনা চলচ্চিত্র। তবে চলচ্চিত্র উন্নয়নে প্রতিষ্ঠিত ‘বেইজিং ফিল্ম অ্যাকাডেমি’ কিন্তু এশিয়ার বৃহত্তর একটি চলচ্চিত্র অধ্যয়ন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। তাই চলচ্চিত্র নিয়ে পড়তে আগ্রহীদের জন্য এবারের আয়োজনে থাকছে ‘বেইজিং ফিল্ম অ্যাকাডেমি’।
বেইজিং ফিল্ম অ্যাকাডেমি’র ভিতর-বাহির
১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত বেইজিং ফিল্ম অ্যাকাডেমির নাম কিন্তু শুরুতেই এটা ছিলো না। প্রতিষ্ঠার সময় একে ‘পারফরমেন্স আর্ট ইন্সটিটিউশন অব দ্য ফিল্ম ব্যুরো অব দ্য মিনিস্ট্রি অব কালচার’ নামে ডাকা হতো। প্রতিষ্ঠার পর থেকে পরবর্তী পাঁচ বছরে এর নাম পরিবর্তন হয় তিনবার। এর মধ্যে ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে ‘ফিল্ম স্কুল অব দ্য ফিল্ম ব্যুরো অব দ্য মিনিস্ট্রি অব কালচার’; ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের মার্চে আবার সেটা পরিবর্তন হয়ে ‘বেইজিং ফিল্ম স্কুল’ এবং তৃতীয়বারের মতো ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের ১ জুন প্রতিষ্ঠানটির নাম রাখা হয় ‘বেইজিং ফিল্ম অ্যাকাডেমি’ (বি এফ এ)।
বেইজিং ফিল্ম অ্যাকাডেমি শুরুতে ‘স্কুল অব ফটোগ্রাফি’ ও ‘অ্যানিমেশন স্কুল’ নামে দুইটি স্কুল এবং একটি বিভাগ নিয়ে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠাকালে বি এফ এ’র প্রথম স্নাতক কোর্সে শিক্ষার্থী ছিলো মাত্র ৩৮ জন। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে ‘সাউন্ড রেকর্ডিং’ নামে নতুন একটি প্রোগ্রাম শুরু করা হয়। তবে অফিসিয়ালভাবে সাউন্ড রেকর্ডিং বিভাগটি চালু হয় ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে বি এফ এ ‘ফিল্ম ও টেলিভিশন প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট’-এর ওপর দুই বছর মেয়াদি একটি স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করে। এ কোর্সের ২৮ জন শিক্ষার্থী প্রথম শ্রেণিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে। এর পর কোর্সটির জনপ্রিয়তা বেড়ে গেলে কর্তৃপক্ষ এটাকে বিভাগে রূপান্তর করে।
৬০ দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত এই ফিল্ম অ্যাকাডেমির কল্যাণে চিনে বেশকিছু তরুণ নির্মাতা তৈরি হলেও ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তারা তেমন কিছুই করতে পারেনি। কারণ ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে মাও সে-তুঙ-এর নেতৃত্বে সাংস্কৃতিক বিপ্লব ঘটলে চিনের চলচ্চিত্রশিল্পসহ বি এফ এ’র শিক্ষার্থীরাও খানিকটা সমস্যার মধ্যে পড়ে। এ সময়ে চিনা চলচ্চিত্রের নিয়ন্ত্রণ ছিলো মূলত ‘চার চক্র’ অর্থাৎ ওয়াং হুং-ওয়েন, চাংচুন-চিয়াও, চিয়াং চিং ও ইয়াও ওয়েনইউয়ান নামের চার ব্যক্তির হাতে। এরা সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় নিজেদের পছন্দ ব্যতীত অন্যসব চলচ্চিত্র-নির্মাণই বন্ধ করে দেয়। ফলে এর প্রতিবাদস্বরূপ বি এফ এ’র অধিকাংশ অধ্যাপকই প্রতিষ্ঠানটি ছেড়ে চলে যান। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সমাপ্তি ঘটলে ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে অধ্যাপকদের অনেকেই আবার প্রতিষ্ঠানটিতে ফিরে আসেন। এরপর বি এফ এ যেনো আবার প্রাণ ফিরে পেতে থাকে। তরুণ নির্মাতারা তখন নিজেদেরকে প্রকাশ করতে শুরু করে এবং চলচ্চিত্রের প্রয়োগ ও আঙ্গিকে নানাধরনের নতুনত্ব ও আধুনিকতার ছোঁয়া লাগাতে থাকে। তারা চিনের অপেরাধর্মী কাঠামোকে পুরোপুরি বর্জন করে মানুষের মৌলিক বিষয় ও বাস্তব অবস্থা চলচ্চিত্রে ফুটিয়ে তুলতে থাকেন। এ সময় তারা চিনা চলচ্চিত্রে নানাধরনের উন্নতি সাধনেও এগিয়ে আসেন। তখনকার উল্লেখযোগ্য নির্মাতারা হলেন ট্যাং ওয়েজি, জি ফেই, হুয়াং সুকিন, হুয়াং জিয়াংঝুং য়ু তাংমিং প্রমুখ। যাদের মধ্যে এখনো অনেকে চলচ্চিত্র নির্মাণ করে চলেছেন।
এরপর ঝ্যাং ইমৌ, চেন কাইগে, গুয়াং জিয়ানকিন, তিয়ান ঝুয়াং-এর মতো বিখ্যাত সব নির্মাতাদের হাত ধরে চিনের নতুন ধরনের চলচ্চিত্র যাত্রা শুরু করে। যাদের সবাই ছিলেন বি এফ এ স্নাতক। এরা মূলত ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে বিতর্কিত বিষয়, কাহিনি, ক্যামেরা মুভমেন্টের অবজেক্টিভ ব্যবহার করে নানাধরনের নিরীক্ষা চালান। ফলে এতে একদিকে সনাতনী সংস্কৃতি ও আধুনিক সংস্কারের মধ্যে সংঘাত দেখা দেয়। অন্যদিকে চলচ্চিত্রে শুরু হয় স্থান, কাল ও দেশজ অনুসন্ধান, যা চিনের সনাতনী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের নান্দনিকতা থেকে পুরোপুরি আলাদা। এ সময়ের নির্মাতারা বেশকিছু আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন। দ্য বিগ প্যারাডি (১৯৮৬), দ্য ব্লু (১৯৮৯), কাইট ব্লাডি মর্নিং (১৯৯০) এ সময়ের উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র।
১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইউনিভার্সিটি ফেডারেশন’-এর সদস্য পদ পায় বি এফ এ। বি এফ এ ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে সাফল্যের সঙ্গে বেইজিং ‘ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইউনিভার্সিটি ফেডারেশন’-এর সম্মেলনও আয়োজন করে। বিশ্বের ৪৮টি দেশের প্রায় একশোটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইশো জনেরও বেশি প্রতিনিধি এ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। বি এফ এ বিশ্বের ১০টির বেশি দেশের ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে নানা প্রোগ্রাম চালু রেখেছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য প্রতিবছর নানা দেশের চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞদের ক্লাস নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণও জানায় অ্যাকাডেমি। ২০০২ খ্রিস্টাব্দ থেকে বি এফ এ’র বিদেশি স্নাতকদের চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে আসছে। এখন পর্যন্ত ১২ বার এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। চিনের বিখ্যাত নির্মাতা সিয়ে ফেই-এর উদ্যোগে বি এফ এ এই প্রদর্শনীর আয়োজন করে। প্রতিবছর বিশ্বের ৪০টিরও বেশি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেয়; যা এশিয়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী স্নাতক চলচ্চিত্র উৎসব।
বেইজিং-এর হাইদান জেলায় অবস্থিত বেইজিং ফিল্ম অ্যাকাডেমি দেশটির একমাত্র চলচ্চিত্রবিষয়ক প্রতিষ্ঠান, যা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ভুক্ত। এর চলচ্চিত্র স্কুলটি এশিয়ার মধ্যে বৃহত্তম। বর্তমানে বি এফ এ-তে আড়াই হাজার শিক্ষার্থী, দুইশো ৬৩ জন ফ্যাকাল্টি মেম্বার ও পাঁচশো শিক্ষক রয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় এক হাজার পাঁচশো জনই বিদেশি। বর্তমানে সোংচুয়াং জেলাতেও ফিল্ম অ্যাকাডেমির একটি নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণ করা হয়েছে। যাতে সেখানে আরো চার হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা ও আবাসন সুবিধা পায়। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য এখানে ২০০০ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে হোস্টেল চালু করা হয়। বিদেশি শিক্ষার্থীদের সুস্থ, সুন্দর ও আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই নির্মাণ করা হয় এই হোস্টেলটি।
বি এফ এ-তে চারটি প্রফেশনাল স্টুডিও রয়েছে। স্টুডিওগুলো আধুনিক যন্ত্রপাতিতে সজ্জিত। শিক্ষার্থীরা এসব স্টুডিওতে চলচ্চিত্র-নির্মাণের সুযোগ পায়।
যেসব বিষয়ে পড়াশোনা হয়
বি এফ এ চলচ্চিত্রের বিভিন্ন বিষয়ের ওপর অ্যাসোসিয়েট, ব্যাচেলর ও মাস্টার্সসহ বিভিন্ন মেয়াদে ডিগ্রি দিয়ে থাকে। এছাড়া এখানে পিএইচ ডি করারও সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে বি এফ এ-তে সাতটি বিভাগে পড়ানো হয়। বিভাগগুলো হলো : ডিপার্টমেন্ট অব ডিরেক্টিং, সিনেমাটোগ্রাফি, ফাইন আর্টস, ম্যানেজমেন্ট, স্ক্রিনরাইটিং, সাউন্ড রেকর্ডিং ও ডিপার্টমেন্ট অব বেসিক এডুকেশন। এছাড়া অ্যাকাডেমির অধীনে ইন্সটিটিউট অব ফিল্ম স্টাডিজ ও ডিজিটাল মিডিয়া ইন্সটিটিউট নামে স্বতন্ত্র দুটি ইন্সটিটিউট রয়েছে।
ডিপার্টমেন্ট অব স্ক্রিনরাইটিং : বি এফ এ-তে এই বিভাগের ইতিহাস অতি পুরনো এবং চিনের চলচ্চিত্র শিক্ষায় এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই বিভাগের শিক্ষার ক্ষেত্রে ধরে নেওয়া হতো, চিত্রনাট্যই আসল এবং এখান থেকেই চলচ্চিত্রের জন্ম। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে এই বিভাগে ফিল্ম প্লে রাইটিং ও ফিল্ম এডিটিং-এর ওপর দুই বছর মেয়াদি স্নাতক কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হয়। এরপর ১৯৬০-এ ওই দুই বিষয়ে ব্যাচেলর প্রোগ্রাম চালু করা হয়। পরে ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে চিত্রনাট্য রচনার ওপর চালু করা হয় চার বছর মেয়াদি স্নাতক ডিগ্রি। একই বছর স্নাতকোত্তর এবং ২০০৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে পিএইচ ডি প্রোগ্রাম চালু হয়। এই বিভাগে প্রথাগত পাঠদানের পাশাপাশি ব্যবহারিক কাজের ওপরও জোর দেওয়া হয়।
ডিপার্টমেন্ট অব ডিরেক্টিং : ৫০ বছর ধরে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে চিনের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন প্রোডাকশনের ক্ষেত্রে বিভাগটি অনেক দক্ষ ও মেধাবী নির্মাতা তৈরি করেছে। এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের তত্ত্বীয় জ্ঞানের পাশাপাশি ব্যবহারিক দিকেও অনেক এগিয়ে থাকতে হয়। চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন পরিচালনার মৌলিক নিয়মকানুন সম্পর্কে পদ্ধতিগত জ্ঞানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সাহিত্য, শিল্প তত্ত্ব, ইতিহাস, ভিডিও-অডিও বিষয়ক দক্ষতা, গল্প বলার কৌশল, মডেলিং ও শব্দ সম্পর্কে জ্ঞান দেওয়া হয়।
বিভাগটিতে তিনটি বিষয়ের ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়—ফিকশন ফিল্ম, প্রামাণ্যচিত্র ও চলচ্চিত্র সম্পাদনা। স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও ডক্টরাল ছাড়াও বিভাগে পেশাজীবীদের জন্য স্বল্পমেয়াদি বিভিন্ন কোর্সও করানো হয়। শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে কোর্সের আওতায় শিক্ষার্থীদের তিন থেকে ৩০ মিনিট ব্যাপ্তির একাধিক চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হয়।
ডিপার্টমেন্ট অব সিনেমাটোগ্রাফি : শুরু থেকেই বি এফ এ-তে সিনেমাটোগ্রাফি বিভাগটি চালু করা হয়। চিনের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্পে এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের রয়েছে একক আধিপত্য। এই বিভাগের আবশ্যিক কোর্সের মধ্যে রয়েছে লেন্স, ফটোগ্রাফিক কৌশল ও দক্ষতা, মুভি ক্যামেরা, লাইটিং, ফিল্ম শুটিংয়ের বেসিক, ফ্রেমিং, গ্রাফিক, নন-লিনিয়ার এডিটিং প্রভৃতি। এর বাইরে চিনা চলচ্চিত্রের ইতিহাস, বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র ইতিহাস, নাটক, শব্দ, চলচ্চিত্র-নির্মাণ, বাজারজাতকরণ বিষয়ে ঐচ্ছিক বেশকিছু কোর্স পড়ানো হয়।
ডিপার্টমেন্ট অব সাউন্ড রেকর্ডিং : সাউন্ড রেকর্ডিং বা শব্দ ধারণ বিভাগটির পূর্বের নাম ছিলো ফিল্ম ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। এটি ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত। ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে নাম পরিবর্তন করার পর থেকে শব্দ ধারণ বিষয়ে বিভাগটি অনেক দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলছে। যাদের অনেকেই সাউন্ড আর্টিস্ট হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে এবং দেশসহ সারাবিশ্বে পুরস্কারও অর্জন করেছে। শব্দ ধারণ নিয়ে কাজ করার জন্য এই বিভাগে একটি আধুনিক গবেষণাগার রয়েছে। এছাড়া বিভাগের অধীনে রয়েছে ডিজিটাল ও অ্যানালগ ভয়েস রেকর্ডিং স্টুডিও, ডাইনামিক ইফেক্ট রেকর্ডিং স্টুডিও, ডিজিটাল অডিও ওয়ার্ক স্টেশন, ডিভিডি রেকর্ডিং স্টুডিও, ডলবি ৫.১ ফিল্ম রেকর্ডিং স্টুডিও, পিয়ানো হাউজ, মিউজিক মাস্টারিং ও মেকিং স্টুডিও। এখানে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন টেকনিক, নেটওয়ার্ক মিডিয়া টেকনোলজি অ্যান্ড আর্ট, শব্দ বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের শব্দ সংযোজনসহ বেশকিছু কোর্স পড়ানো হয়। একই সঙ্গে কম্পিউটার, মাল্টিমিডিয়া, নেটওয়ার্ক, অডিও-ভিডিও এবং চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের জন্য শব্দ তৈরি ও ডিজাইনের কারিগরি বিষয়সমূহও এই বিভাগে শেখানো হয়।
ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন আর্টস : ফাইন আর্টস বিভাগটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে। ৫৭ বছর ধরে বিভাগটি চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন বিজ্ঞাপন, স্পেশাল ইফেক্ট ও প্রোগ্রাম ডিজাইনের ওপর মেধাবী কারিগর তৈরিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এখানে শিক্ষার্থীদের প্রথাগত ফিল্ম পেইন্টিংয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্র ও টিভি স্পেশাল ইফেক্ট, বিজ্ঞাপন নির্মাণ, বিজ্ঞাপন তত্ত্ব, পিকচার ডিজাইন, পেইন্টিং, স্থাপত্যবিদ্যা ও ভিজ্যুয়াল আর্ট ইমেজিং-এর বিভিন্ন কৌশল বিষয়ে পাঠ দান করা হয়।
যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিভাগটিতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির চলচ্চিত্র ও টিভি স্পেশাল ইফেক্ট ল্যাব, বিজ্ঞাপন নির্মাণ ল্যাব, নিউমিডিয়া আর্ট ল্যাব ও মডেল প্রোডিউসিং ল্যাব রয়েছে। এখানকার স্পেশাল ইফেক্ট স্টুডিওতে স্টিডিক্যাম ফটোগ্রাফিক ক্যামেরা, ১২ মিটার লিফটিং আর্ম, মোশন কন্ট্রোল ও নানা প্রোফেজ-ফটোগ্রাফিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। পাশাপাশি এখানে এডিটিং ও কম্পোজিংয়ের জন্য জি৫ অ্যাপল কম্পিউটার এবং পরিপূর্ণ এডিটিং সিস্টেম যেমন এভিডি, ফাইনাল কাট, শেক ও মায়া রয়েছে, যা দিয়ে ত্রিমাত্রিক চিত্র তৈরি ও সম্পাদনা করা যায়।
ডিপার্টমেন্ট অব ম্যানেজমেন্ট : ম্যানেজমেন্ট বিভাগ স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও দুই বছর মেয়াদি ট্রেনিং কোর্স পরিচালনা করে থাকে। বিভাগটিতে মূল কোর্স রয়েছে চারটি—ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন প্রোডাকশন, ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন মার্কেটিং অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, কালচারাল মার্কেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও পাবলিক সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। এছাড়া এ বিভাগে ইনফরমেশন সিস্টেম, প্রফেশনাল ইংলিশ, ফিল্ম ইকোনোমিকস, ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ল অব ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইকোনমি, সায়েন্স অব ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন অডিয়েন্স ও ল অব ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশনসহ প্রায় ১৭টি ঐচ্ছিক কোর্স পড়ানো হয়।
ডিপার্টমেন্ট অব বেসিক এডুকেশন : সামাজিক বিজ্ঞান, শারীরিক শিক্ষা ও বিদেশি ভাষা শিক্ষার উদ্দেশ্যে বেসিক এডুকেশন বিভাগটি গড়ে উঠেছে। অ্যাকাডেমির প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষার্থীদের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা দেওয়াই এ বিভাগের মূল কাজ। তাই অ্যাকাডেমিতে যে যেই বিভাগেই ভর্তি হোক না কেনো, তাকে এই বিভাগের অধীনে পড়তে হয়। এছাড়া চিনের চলচ্চিত্রশিল্পকে পেশাদারিত্বের সঙ্গে বোঝার ক্ষেত্রে সামাজিক বিজ্ঞানের মৌলিক জ্ঞানও এই বিভাগ থেকেই দেওয়া হয়।
ইন্সটিটিউট অব ফিল্ম স্টাডিজ অব বেইজিং ফিল্ম অ্যাকাডেমি : এটি বি এফ এ’র অধীনে পরিচালিত একটি স্বতন্ত্র ইন্সটিটিউট। এই ইন্সটিটিউটের অধীনে গবেষকরা চলচ্চিত্রের ইতিহাস ও তত্ত্ব, শিল্প ও নান্দনিকতা, সংস্কৃতি ও যোগাযোগ প্রভৃতি নিয়ে গবেষণা করে থাকেন। অন্যদিকে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন তত্ত্ব কোর্সটি এখানে পড়ানো হয়। ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে ইন্সটিটিউটে প্রথমবারের মতো পিএইচ ডি প্রোগ্রাম চালু করা হয়। ফলে এখানে দেশি-বিদেশি গবেষকরা চিনা ও বিদেশি চলচ্চিত্র এবং সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করতে পারে।
ডিজিটাল মিডিয়া ইন্সটিটিউট : ২০০২ খ্রিস্টাব্দ থেকে এই ইন্সটিটিউটের যাত্রা শুরু। এখানে তারুণ্যদীপ্ত, সৃজনশীল ও উদ্যমী একদল গবেষক রয়েছে। যারা চলচ্চিত্র ক্ষেত্রে আধুনিকায়নে বিভিন্ন ধরনের গবেষণামূলক কাজ করে থাকে। এছাড়া এই ইন্সটিটিউটটি ন্যাশনাল ব্রডকাস্ট, মোশন পিকচার্স, বেইজিং শিক্ষা কমিশন, টেলিভিশন ব্যুরোকে নানাভাবে সাহায্য করে।
বি এফ এ’র অধীনে বিভিন্ন বিভাগ ছাড়াও পাঁচটি স্কুল রয়েছে। স্কুলগুলো হলো : স্কুল অব পারফর্মিং আর্টস, স্কুল অব অ্যানিমেশন, স্কুল অব ফটোগ্রাফি, স্কুল অব কনটিনিউ এডুকেশন ও ইন্টারন্যাশনাল স্কুল।
স্কুল অব পারফর্মিং আর্টস : ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত পারফর্মিং আর্টস স্কুলটি প্রকৃতপক্ষে ‘চাইনিজ সেন্ট্রাল পারফর্মিং ইন্সটিটিউট’ নামে পরিচিত। এখানে পেশাদারী অভিনয়, চলচ্চিত্রের মৌলিক তত্ত্ব, ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ কোর্সসহ মোট ৪০টি কোর্সে পড়ানো হয়। বিভাগটি স্নাতক ডিগ্রি ছাড়াও শিক্ষক প্রশিক্ষণ, বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং প্রফেশনাল লিডার্স প্রশিক্ষণও প্রদান করে।
স্কুল অব অ্যানিমেশন : বেইজিং ফিল্ম অ্যাকাডেমি’র অ্যানিমেশন স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয় ২০০০ খ্রিস্টাব্দে। বিভিন্ন প্রজন্মের বিখ্যাত চাইনিজ অ্যানিমেশন নির্মাতা অ্যা ডা (থ্রি মঙ্কস-এর পরিচালক), ডাই টিয়ালান (পুলিশ অফিসার ব্লাক ক্যাট-এর পরিচালক), লিন ওয়ায়িনসিয়াও (চাইল্ড অব স্নো’র পরিচালক) এ স্কুল থেকেই অ্যানিমেশন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এই স্কুলে দুইটি অ্যানিমেশন প্রোডাকশন স্টুডিও ও একটি মোশন ক্যাপচার ল্যাব রয়েছে।
স্কুল অব কনটিনিউ এডুকেশন : চলচ্চিত্র বিষয়ে আগ্রহী বয়স্ক শিক্ষার্থীরা কনটিনিউ এডুকেশন স্কুলে লেখাপড়া করেন। এটি ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠা করা হলেও ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ব্যাচে ভর্তি শুরু হয়। স্কুলটি আগে রাতে পরিচালিত হওয়ায় এর নাম ছিলো ‘নাইট স্কুল অব বেইজিং ফিল্ম একাডেমি’। ২০০২ খ্রিস্টাব্দে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘দ্য স্কুল অব কনটিনিউ এডুকেশন’।
স্কুল অব ফটোগ্রাফি : এটি চিনের সবচেয়ে পুরাতন ফটোগ্রাফি প্রতিষ্ঠান। ঐতিহ্যবাহী ফটোগ্রাফির ধারণা ও কৌশল নিয়ে এখানে পড়াশোনা করা হয়। ফটোগ্রাফির আধুনিক সব যন্ত্রপাতি এখানে রয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল স্কুল : স্কুলটি মূলত বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য। বাংলাদেশ, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি, সুইডেন, যুক্তরাজ্য, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রায় ৪০টি দেশের শিক্ষার্থীরা এখানে পড়াশোনা করতে আসে। ভাষা হিসেবে এখানে চিনার পাশাপাশি ইংরেজিও ব্যবহার করা হয়। বিদেশি শিক্ষার্থীরা সরকারি বৃত্তি অথবা নিজেদের খরচে আন্তর্জাতিক এ স্কুলে ফিল্ম কোর্সে পড়াশোনার জন্য আবেদন করতে পারে। এখানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও বসবাসের জন্য অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
ভর্তি প্রক্রিয়া
‘বেইজিং ফিল্ম অ্যাকাডেমি’তে আসন সংখ্যা অনেক কম। এ কারণে এখানে ভর্তি প্রক্রিয়া অনেক প্রতিযোগিতাপূর্ণ। স্নাতক, স্নাতকোত্তর, পিএইচ ডি ও বিভিন্ন মেয়াদি কোর্সে এখানে সবমিলে আসন রয়েছে পাঁচশোটি। সাধারণত প্রতি বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে নতুন বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়। অধিকাংশ সময় এখানে ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিদেশি শিক্ষার্থীরা বি এফ এ’র ওয়েবসাইটে দেওয়া আবেদনপত্র পূরণের মাধ্যমে দরখাস্ত করতে পারবেন। আবেদনপত্র ওয়েবে দেওয়া ইমেইলে পাঠানোর পাশাপাশি হার্ড কপিও অ্যাকাডেমির ঠিকানায় পাঠাতে হবে। এছাড়া আবেদনপত্রের সঙ্গে নিবন্ধন ফি পাঠাতে হবে একশো ৪০ ইউ এস ডলার। যদি কেউ একাধিক বিভাগে আবেদন করতে চায় তাহলে তাকে প্রতি বিভাগের জন্যই নিবন্ধন ফি জমা দিতে হবে। নিবন্ধন ফি ছাড়া আবেদনপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে। আর হ্যাঁ, আবেদনপত্রের সঙ্গে বিদেশি শিক্ষার্থীকে অবশ্যই পাসপোর্টের ফটোকপি সংযুক্ত করতে হবে এবং হার্ড কপির সঙ্গে চার কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি পাঠাতে হবে।
আবেদনপত্র অ্যাকাডেমি কর্তৃপক্ষের কাছে যথাযথ মনে হলে, তারা ইমেইলের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করবে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ইন্টারন্যাশনাল ট্রেনিং সেন্টার’-এ গিয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। পরীক্ষার পর আবেদনকারীর আবেদন, বিভিন্ন পরীক্ষার সনদ ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখবে চিনের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অতীতে অ্যাকাডেমিতে শুধু চিনা ভাষায় পড়াশোনার ব্যবস্থা থাকলেও বর্তমানে বিভিন্ন বিভাগে ইংরেজি ভাষাতে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বি এফ এ’র হোস্টেলগুলোতে থাকার সুব্যবস্থাও রয়েছে। অন্যদিকে চিনের সরকারি বৃত্তি নিয়েও বি এফ এ-তে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। তবে সেজন্য চিনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন ওয়েবসাইটে সংশ্লিষ্ট আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।
যোগাযোগের ঠিকানা
Room 113, International School H Building Beijing Film Academy
No.4 Xitucheng Rd. Haidian District
Beijing China Post number: 100088
Tel: 0086-010-8204 5433 Fax: 0086-010-8204 3731
Email: ao.is@bfa.edu.cn
web: ww w.bfa.edu.cn
লেখক : পপি সরদার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
popysarder@gmail.com
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন