Magic Lanthon

               

ম্যাজিক লণ্ঠন ডেস্ক

প্রকাশিত ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১২:০০ মিনিট

অন্যকে জানাতে পারেন:

জীবনমঞ্চ ত্যাগ করলেন হায়দার রিজভী

ম্যাজিক লণ্ঠন ডেস্ক

চলচ্চিত্রনির্মাতা হায়দার রিজভী আর নেই। আজ রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) সকালে গুলশানে নিজ বাসভবনে অসুস্থ হলে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আজ দুপুরে তেজগাঁওয়ে স্পাহানি কবরস্থানে তাকে চিরদিনের জন্য শায়িত করা হবে। তার মৃত্যুতে গভীরভাবে শোক প্রকাশ করছে ম্যাজিক লণ্ঠন।

ম্যাজিক লণ্ঠনে হায়দার রিজভীর জীবন ও কর্ম নিয়ে বিশাল একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে। চলচ্চিত্রশিক্ষার্থী ও অনুরাগীদের কাছে ব্যাপক আগ্রহের পর সাক্ষাৎকারটি ম্যাজিক লণ্ঠন প্রকাশন থেকে প্রথম বই হিসেবে প্রকাশ করা হয় একইসঙ্গে পথচলা শুরু হয় ম্যাজিক লণ্ঠন প্রকাশনের। 'মুখোমুখি হায়দার রিজভী'বইটির মধ্য দিয়েই মূলত বাংলাদেশে স্যার নতুন করে পরিচিতি পেয়েছিলেন। তার প্রয়াণে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিক্ষার অপূরণীয় ক্ষতি হলো।

হায়দার রিজভী ১৯৪৪ সালের কিশোরগঞ্জ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। স্কুল আর কলেজের পাঠ চুকিয়ে ১৯৬২ সালে বাবার ইচ্ছায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি পড়তে যান লন্ডনে। কিন্তু চলচ্চিত্রের সঙ্গে সখ্য যার তার মন বসে না এই হিসাবনিকাশে, ভর্তি হন ‘অ্যাক্টরস স্টুডিওতে এবং সেখানেই স্নাতক সম্পন্ন করেন ১৯৬৬ সালে। এরপর দুই বছর যুক্তরাজ্যে পেশাদারি মঞ্চনাটকে কাজ করে ফিরে আসেন বাংলাদেশে এবং তৎকালীন পিটিভির ঢাকা কেন্দ্রে সহকারী প্রযোজক হিসেবে যোগদান করেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে টেলিভিশনের পাশ ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদ স্থানে যাতায়াতে নানাভাবে সহায়তা করতেন তিনি এবং পাকিস্তানি মিলিটারির নৃশংসতার তথ্য বিভিন্ন বিদেশি মিডিয়াতে গোপনে সরবরাহ করতেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বিটিভিতে প্রযোজক পদে উন্নীত হন এই গুণী নির্মাতা। এর পরের বছরই পোল্যান্ডের Lody Film School-এ বৃত্তি নিয়ে ফিল্ম ডিরেকশনে পড়তে যান।

তিনি বিশ্বখ্যাত পোলিশ নির্মাতা আন্দ্রে ভাইদা এবং লার্স ভন তিয়ার-এর প্রধান সহকারী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান। ২০০৪ পর্যন্ত পোল্যান্ডেই একাধিক প্রামাণ্যচিত্র, কাহিনীচিত্র এবং টিভি। সিরিজ নির্মাণ করেন, যার মধ্যে কাহিনীচিত্র ‘Nursery Rhymes’ এবং টিভি সিরিজ ‘Adam and Eve’ উল্লেখযোগ্য।

২০০৫ সালে অবশেষে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন হায়দার রিজভী, যোগদান করেন বৈশাখী টেলিভিশনে প্রতিষ্ঠাতা সিইও হিসেবে। এক বছর পর পদত্যাগ করেন এবং ২০১২ সাল থেকে স্বেচ্ছায় নিয়োজিত হন শিক্ষকতা পেশায়। বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলচ্চিত্রের শিক্ষক হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে তৈরি করে যাচ্ছেন তরুণ প্রজন্মের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের।


এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন