সাবিহা তমা
প্রকাশিত ১৯ আগস্ট ২০২৩ ১২:০০ মিনিট
অন্যকে জানাতে পারেন:
ইএনএস লুই লুমিয়ের স্কুল, ফ্রান্স
সাবিহা তমা

প্যারিসকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো চলচ্চিত্র শহর। একই সঙ্গে এটি ইউরোপের সবচেয়ে বড়ো প্রোডাকশন হাউসও। ১১৭ বছর আগে যখন এই শহরের সৌন্দর্যকে প্রথম মোশন পিকচারস-এ ধরা হয়েছিলো, তখন থেকেই প্যারিসে ক্রমাগত সাংস্কৃতিক ও কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে প্যারিস চলচ্চিত্র-শিল্প অর্থনৈতিক দিক থেকে উন্নত হয়ে ওঠে দিনে দিনে।এই শহরেই ১৮৯৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো দর্শকরা পয়সা দিয়ে টিকিট কেটে সিনেমা দেখেছিলো। আর সে-দিন থেকেই বিজ্ঞানী এবং চলন্ত ছবির খেলনা বিক্রি করা ব্যবসায়ীদের হাত থেকে চলচ্চিত্র পৌঁছে গিয়েছিলো নতুন এক গোষ্ঠীর হাতে; বর্তমানে আমরা যাদের চিনি প্রযোজক, প্রদর্শক বলে। এই শহরে মেলিয়ের গড়েছিলেন প্রথম ফিল্ম কোম্পানি, ১৮৯৭ সালে। সেই শহরে এখন অগণিত স্বাধীন থিয়েটার, যেখানে এক সপ্তাহে যে-কেউ চাইলে দেখতে পারেন ৩০০-এর বেশি চলচ্চিত্র। সেই শহর ফ্রান্সের প্যারিস, লুই লুমিয়ের ও অগাস্ত লুমিয়েরের শহর।
বিশ্ব চলচ্চিত্রের প্রথম যুগের গৌরবময় এসব ভূমিকা ফ্রান্সের দখলে থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ একটি দিকে দীর্ঘদিন পর্যন্ত তাদের যেনো কোনো নজরই ছিলো না। সেটা চলচ্চিত্রের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দিক; এ নিয়ে তারা কেনো জানি মাথা ঘামাননি। অবশ্য সময় বসে থাকেনি। সেই সুযোগটি লুফে নিয়েছিলো সেই সময়ের সোভিয়েত রাশিয়া। মহামতি লেনিন অক্টোবরের বিপ্লবের দুই বছরের মাথায় ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন চলচ্চিত্র শিক্ষার প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়োজনের কথা। তারই ফলে ১৯১৯ সালে লেনিন নেতৃত্বাধীন সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলো ‘অল ইউনিয়ন স্টেট ইন্সটিটিউট অব সিনেমাটোগ্রাফি’ সংক্ষেপে ‘ভিজিআইকে’। এটি ছিলো চলচ্চিত্র শিক্ষায় বিশ্বের প্রথম কোনো প্রতিষ্ঠান। ম্যাজিক লণ্ঠন এর প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় সংখ্যায় আমরা এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এ-সংখ্যায় চলচ্চিত্রের মাতৃভূমি খ্যাত ফ্রান্সের প্রথম চলচ্চিত্র শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের নানা দিক তুলে ধরবো।
১.
লুমিয়েরদের সময়ে সব ছবিই একটি মাত্র শটে নির্মিত হতো। এই কারণে এসব ছবি সম্পাদনার কোনো প্রয়োজন ছিলো না। একটি শটের এসব চলচ্চিত্র বেশ সময় ধরে সারা পৃথিবীতে শিল্প ও ব্যবসায়িক পণ্য হিসেবে সাড়া ফেলে। কিন্তু এক সময় এ-ধরনের চলচ্চিত্র দেখতে দেখতে দর্শকদের মধ্যে ক্লান্তি এসে যায়, কমতে শুরু করে লুমিয়েরদের ব্যবসা। যদি এভাবেই চলতে থাকতো তাহলে হয়তো দর্শকের অভাবে চলচ্চিত্র শেষ হয়ে যেতো।
চলচ্চিত্র ইতিহাসের এমন এক পর্যায়ে ফ্রান্সে আবির্ভাব হয় জর্জ মেলিয়ের। লুমিয়েরদের চলচ্চিত্র দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন জাদুকর মেলিয়ের; এরপর তিনি ক্যামেরা ও চলচ্চিত্র বানানোর অন্যান্য যন্ত্রপাতি কিনতে আগ্রহী হন। কিনেও ফেলেন। এজন্য তাকে অবশ্য ইংল্যান্ডের চলচ্চিত্রের পথিকৃৎ রবার্ট পলের কাছে যেতে হয়েছিলো। যন্ত্রপাতি কিনেই মেলিয়ের বেরিয়ে পড়েন রাস্তায়। মেলিয়ের-এর চলচ্চিত্রের দৈর্ঘ্য এক মিনিট থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ১০ থেকে ১৫ মিনিটে। এ-সময় থেকে শুরু হয় one-reeler চলচ্চিত্রের যুগ। ১৯১২ সালের মধ্যে ৫০০ ছবি করে ফেললেন মেলিয়ের। ১৯১৩ সালে হঠাৎ করেই মেলিয়ের চলচ্চিত্র করা বন্ধ করে দেন। শেষ হয় মেলিয়ের যুগের।
শুরু হলো প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। এই যুদ্ধ বিশ্ব চলচ্চিত্রের গভীর পরিবর্তন আনলো। সেলুলয়েড তৈরির যে মূল উপাদান নাইট্রিক ও সালফিউরিক এসিড, তা বিস্ফোরক তৈরিরও উপাদান। যুদ্ধকালে বিস্ফোরকের দরকার, ফিল্মের নয়। এতোদিন ফরাসি ছবির বাজার ছিলো বহু বিস্তৃত, কারণ সেই নির্বাক যুগে ভাষার পাঁচিল ছিলো না, ছবি ছিলো আন্তর্জাতিক। কিন্তু যুদ্ধকালে দেশের সীমানা পার করে রপ্তানি হয়ে পড়লো অসম্ভব। এদিকে ইউরোপ থেকে পাঁচ হাজার কিলোমিটার দূরের আমেরিকা যুদ্ধ থেকে সরে রইলো। ১৯১৭ সালের আগে আমেরিকা যুদ্ধে যোগদানই করলো না। এই যুদ্ধে আমেরিকা অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হলো। ফলে সেখানে সিনেমারও জাগরণ ঘটে গেলো। চলচ্চিত্র নির্মাণশিল্পের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য শক্তি হয়ে দাঁড়ালো আমেরিকা। এর আগে ১৯১১ সালেই আমেরিকা অবশ্য লস এঞ্জেলস এলাকায় গড়ে তুলেছিলো চলচ্চিত্র নগরী ‘হলিউড’।
আর এদিকে ফ্রান্সে যুদ্ধের পর ছবি করার মতো বড়ো কোনো কোম্পানি আর রইলো না। তারপরও যে দু-একজন এগিয়ে এসেছিলো তাদের অনেকেই শখের বশে, যাদের বেশিরভাগই দ্বিতীয় ছবি নির্মাণ করেননি। ১৯১৮ সাল পর্যন্ত বিশ্ব চলচ্চিত্রের এই দুই মহারথী দেশ এতো কিছু করলেও চলচ্চিত্রের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কাঠামো নিয়ে কিছুই ভাবেননি।
আগেই বলেছি, এ নিয়ে প্রথম চিন্তা করলো তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়া। লেনিনের ইচ্ছায় ১৯১৯ সালে ভ্লাদিমির গার্ডিন ও আলেকজান্ডার নভিকভ প্রতিষ্ঠা করলেন ‘ভিজিআইকে’। আর এ-বছরেই ফ্রান্সের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় মরিস মাত্রের পরিচালনায় মুক্তি পেলো প্রথম রুশ পূর্ণ্যদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র কসাকস অব দ্য ডন।
এরপর কেটে যায় পাঁচ বছর। ১৯২৪ সালে এসে প্রথমবারের মতো দেশে ফটোগ্রাফি নিয়ে কাজ করা লোকের অভাব দেখা দিলে ফ্রান্সের টনক নড়ে। এই সময় ফ্রান্সে পল মন্টেল-এর নেতৃত্বে একদল শিল্পপতি ফটোগ্রাফি ও চলচ্চিত্র নিয়ে কিছু কাজ-কর্ম করছিলো। ফলে তারা দক্ষ লোকের অভাবে সমস্যায় পড়ে যায়। এমতবস্থায় তারা এ-নিয়ে কথা বলেন লুই লুমিয়েরের সঙ্গে। এতে কাজও হয়, চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফি নিয়ে তারা একটি প্রশিক্ষণ স্কুল প্রতিষ্ঠার কথা চিন্তা করতে থাকেন। এরপর লুই লুমিয়ের-কে চেয়ারম্যান ও লিওঁ গুমন্ট (Leon Gaumont) কে ভাইস-চেয়ারম্যান করে একটি কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়। পরে অবশ্য লুই লুমিয়ের সরে গিয়ে এমিল বুসফ্ল্যাগ-কে ওই কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত করেন।
এরপর এল.পি. ক্লার্ক (L.P. Clerc), পল মন্টেল (Paul Montel) ও এম লোবেল (M. Lobel) কে সঙ্গে নিয়ে স্কুল প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেন। পরে অবশ্য এর ওপর ভিত্তি করেই স্কুলের চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফির পাঠ্যসূচি তৈরি করা হয়। এভাবে কেটে যায় টানা দুই বছর। এরপর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, ১৯২৬ সালে পুরোপুরি প্রতিষ্ঠা হয় এই স্কুল। নাম দেওয়া হয় ইএনএস লুই লুমিয়ার (Ecole Nationale Superieure Louis-Lumiere) স্কুল। যা ইএনএস লুই লুমিয়ের নামে সমধিক পরিচিত।
২.
ইএনএস লুই লুমিয়ার স্কুল প্যারিসের পূর্বদিকের উপশহরে গড়ে ওঠেছিলো মাত্র ৮০০ বর্গমিটার জায়গা নিয়ে। প্রথমে এই স্কুল কিছু শিল্পপতির ব্যক্তিগত উদ্যোগে চললেও ১৯৩৭ সালে এসে তা সরকারি প্রতিষ্ঠানের আওতাভুক্ত হয়। ফ্রান্সের স্বাধীনতার পর ১৯৪৫ সালে স্কুলের প্রধান হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগ দেওয়া হয় ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ইন্সটিটিউটের প্রকৌশলী রবার্ট মগ-কে। তিনি পল মন্টেল-এর স্থলাভিষিক্ত হন।
১৯৪৭ সালে এসে স্কুলে সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ পথ চলা শুরু করে। এর আগে স্কুলে শুধু ফটোগ্রাফি ও চলচ্চিত্র বিভাগ নামে দুটি বিভাগ চালু ছিলো। ২০০৬ সালে ইএনএস তাদের ৮০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করে। এ-উপলক্ষে উল্লেখযোগ্য আয়োজনের মধ্যে ছিলো-একটি আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসব ও ফটোপ্রদর্শনী।
৩.
ইএনএস লুই লুমিয়ের-এ মূলত চলচ্চিত্র, ফটোগ্রাফি ও সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ওপর শিক্ষার্থীরা তাত্ত্বিক, ব্যবহারিক ও কৌশলগত শিক্ষা অর্জন করে থাকেন। দীর্ঘদিন ধরে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অডিও-ভিজ্যুয়াল মাধ্যমে তাদের কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন শাখায় যথাযথ অবদান রেখে আসছে। ফ্রান্সের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ইএনএস থেকে ডিপ্লোমাধারীরা এমফিল-এর সমমান পেয়ে থাকেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইএনএস তিনটি মূলনীতি মেনে চলার চেষ্টা করে :
প্রথমত, শুরু থেকেই এখানে মানসম্পন্ন শিক্ষার ব্যাপারটি নিশ্চিত করা হয়। পাশাপাশি যেকোনো সামাজিক-শ্রেণীর শিক্ষার্থী যেনো এখানে পড়তে পারে তার ব্যবস্থা রাখা হয়।
দ্বিতীয়ত, তাত্ত্বিক পড়াশুনার পাশাপাশি পেশাগত জীবনে এই শিক্ষার্থীরা যেনো সফল হতে পারে-তা মাথায় রেখে পাঠ্যসূচি সমন্বয় করা হয়। এছাড়া শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এসব ক্ষেত্রে কর্মজীবনে সফল ব্যক্তিদের মধ্যে মতামত ও তথ্য বিনিময়ের সুযোগ দেওয়া হয়।
তৃতীয়ত, এই স্কুল সবসময় সৃজনশীলতা, গবেষণা ও বাস্তবজ্ঞান বাড়ানোর ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করে।
এই প্রতিষ্ঠানে চলচ্চিত্র নির্মাণ সংক্রান্ত সব ধরনের সরঞ্জামাদি রয়েছে। ডিজিটাল ও অ্যানালগ দুই মাধ্যমেই এখানে চলচ্চিত্রের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ডিজিটাল এইচডি টুকে ও ৩৫ মিলিমিটারে সিনেমা প্রদর্শনের জন্য এখানে রয়েছে পৃথক প্রেক্ষাগৃহ। আছে তিনটি শ্যুটিং ফ্লোর, সম্পাদনা কক্ষ ও রেকর্ডিং স্টুডিও।
৪.
এবার আসা যাক ভর্তির ব্যাপারে; কীভাবে, কতোদিনের কোর্সে আপনি ভর্তি হবেন এই ইএনএস লুই লুমিয়ার স্কুলে। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, তিন বছরের কোর্সে আপনি দুইভাবে ভর্তি হতে পারেন। প্রথমত, প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি-পরীক্ষার মাধ্যমে। এ-সুযোগ যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে। ভর্তি-পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে আপনি ফিল্ম, ফটোগ্রাফি এবং সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের যেকোনো একটি পছন্দ করতে পারবেন। আর এখানে প্রতি বছর টিউশন ফি হিসেবে খরচ পড়বে মাত্র ৩০০ ইউরো।
দ্বিতীয়ত, আপনি যদি ইউরোপিয় হন কিংবা অন্য কোনো দেশের সমমানের প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া শিক্ষার্থী হন তাহলেও আপনি বিনিময় প্রোগ্রামের আওতায় এখানে পড়াশুনা করার সুযোগ পেতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি দুই পদ্ধতিতে ভর্তির সুযোগ পাবেন।
এক. শিক্ষার্থীরা সরাসরি আবেদন করতে পারবেন। এ-ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। সব মিলিয়ে প্রতি সেমিস্টারের খরচ পড়বে এক হাজার ৫০০ ইউরো।
দুই. ইএনএস লুই লুমিয়েরের সঙ্গে বিশ্বের যেসব প্রতিষ্ঠানের বিনিময় প্রোগ্রাম চালু আছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও এখানে ভর্তির সুযোগ পাবেন। একজন শিক্ষার্থী যদি ইএনএস থেকে বাইরের কোনো প্রতিষ্ঠানে চলে যায়, তবে তার জায়গায় বাইরে থেকে আসা ওই শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারেন। এক্ষেত্রে উভয় শিক্ষার্থীকে তাদের বিনিময় প্রতিষ্ঠানে একটি নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হয়ে থাকে। বিনিময়ের ক্ষেত্রে পড়াশুনার খরচ শিক্ষার্থীর নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে নির্ধারিত হয়ে থাকে।
এছাড়া যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এখানে স্বল্পমেয়াদী বিভিন্ন কোর্সে পড়ার সুযোগ পাবেন। একটা বিষয় এখানে মনে রাখা জরুরি, ইএনএস-এ সব ধরনের পড়াশুনা আপনাকে ফ্রেঞ্চ ভাষায় করতে হবে। প্রতি বছর অক্টোবর থেকে এখানে সেশন শুরু হয়।
৫.
ইএনএস-এ এর তিন বছর মেয়াদী কোর্সের প্রথম বছর সাধারণত মৌলিক সব তাত্ত্বিক পড়াশুনা করানো হয়। এর বাইরে ক্যামেরা চালানো, সাউন্ড রেকর্ডিং, পোস্ট-প্রোডাকশন সংক্রান্ত ব্যবহারিক ক্লাস ও অনুশীলন করানো হয়।
দ্বিতীয় বর্ষে তত্ত্ব ও ব্যবহারিক কাজের সমন্বয় করা হয়। ৩৫ মিলিমিটার, ১৬ মিলিমিটার ও ডিজিটাল ফরমেটে প্রামাণ্যচিত্র, কাহিনীচিত্র নির্মাণ-সংক্রান্ত বিস্তারিত ধারণা দেওয়া হয়। ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে স্টুডিও ও ল্যাবরেটরির কাজ, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে রেডিওর খুঁটিনাটি, গান ধারণ ইত্যাদি শেখানো হয়।
তৃতীয় বর্ষে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের একটি গবেষণা প্রকল্প জমা দিতে হয়। যার মধ্যে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, প্রামাণ্যচিত্র, শব্দ ও ছবি সম্পাদনা, মাল্টিমিডিয়া প্রোডাকশন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা থাকে। তিন বছরের শিক্ষাজীবনে শিক্ষার্থীদের বেশকিছু কনফারেন্সে অংশ নিতে হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা থাকে।
লেখক : সাবিহা তমা গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
sabihatoma@ gmail.com
সহায়ক সূত্র
শতবর্ষে চলচ্চিত্র ২ (২০০৯), সম্পাদনা-নির্মাল্য আচার্য ও দিব্যেন্দু পালিত; আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা।
www.ens-louis-lumiere.fr/en.html
http:// en.wikipedia.org/wiki/category:Film schools in France
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন