Magic Lanthon

               

ম্যাজিক লণ্ঠন ডেস্ক

প্রকাশিত ০২ মে ২০২৩ ১২:০০ মিনিট

অন্যকে জানাতে পারেন:

জীবনের কঠিন হিসেব ও ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’

ম্যাজিক লণ্ঠন ডেস্ক


সিনেমার নাম : মন্দ মেয়ের উপাখ্যান

পরিচালক : বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত

নির্মাণকাল : ২০০২ সাল, ভারত

সম্পাদনা : রবিরঞ্জন মৈত্র

সঙ্গীত পরিচালনা : বিশ্বদেবদাশ গুপ্ত

সিনেমাটোগ্রাফি : ভেনু

প্রযোজনা : আর্য ভট্টাচার্য

ব্যাপ্তি : এক ঘণ্টা ২৪ মিনিট

 

গোসাইপাড়া পতিতালয়। পুরনো একটি বাড়িকে ঘিরে এই কর্মযজ্ঞ। যেখানে মা মেয়েকে প্রস্তুত করতে চায় তার যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে। চায় নিশ্চিত জীবন। রজনী, বাসন্তী, বকুল’রা এখানে আসে, যায়। কিন্তু জীবনের হিসেব মেলাতে পারে না।

নটবর বাবুরা তাদের প্রয়োজন মতো সেখানে যায়, ফিরে আসে।  নটবর বাবুর গাড়ি চালকের বোধ এবং সেই বোধের প্রকাশে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তার জীবন। অস্তিত্বে থেকেও তিনি যেনো অনেকটাই অস্তিত্বহীন। তার জীবনে আছে স্বাভাবিক জীবনের উপস্থিতি, আছে কাম। কিন্তু তার প্রকাশও ম্রিয়মান।       

অন্যদিকে স্কুল শিক্ষক নগেণ বাবু; সবার ভেতরে থেকেও আলাদা। স্বপ্ন তার এগিয়ে যাওয়ার, অন্যকে এগিয়ে নেওয়ার। সেই স্বপ্ন-পথের সঙ্গী হয় লতি। লতির স্বপ্ন একাকার হয়ে যায় নগেণ বাবুর স্বপ্নে। শুরু হয় উজান যাত্রা। 

‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’ ২০০২ সালে ভারতের জাতীয় পুরস্কার পায় শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে।


অভিনয় : ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, তাপস পাল, সমতা দাস, রামগোপাল বাজাজ, প্রদীপ মূখার্জী, সরোজ গুপ্ত, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, শ্রীলেখা মিত্র প্রমূখ।


বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত ও তার সিনেমা : বুদ্ধদেবের জন্ম ১৯৪৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ার কাছে অনাড়া’য়। নয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। চলচ্চিত্রের প্রতি তার আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। পড়াশুনা করেছেন বিখ্যাত স্কটিস চার্চ কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিষয় অর্থনীতি। হাইস্কুলে পড়ার সময় তিনি সদস্য হন কলকাতা ফিল্ম সোসাইটির। চ্যাপলিন, বার্গম্যান, ক্যুরোশাওয়া, সত্যজিৎয়ের সিনেমা তাকে চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহী করে তোলে।

কর্মজীবন শুরু কলেজের শিক্ষক হিসেবে। ১৯৬৮ সালে ‘দ্য কন্টিনেন্ট অব লাভ’ প্রামাণ্যচিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে হাতেখড়ি। এরপর একে একে নির্মাণ করেন সময়ের কাছে (১৯৬৮), দূরত্ব (১৯৭৮), নিম অন্নপূর্ণা (১৯৭৯), গৃহযুদ্ধ (১৯৮২), অন্ধগলি (১৯৮৪), ফেরা (১৯৮৮) বাঘ বাহাদুর (১৯৮৯), তাহাদের কথা (১৯৯২), চরাচর (১৯৯৩), লাল দরজা (১৯৯৭), উত্তরা (২০০০), স্বপ্নের দিন (২০০৪), আমি ইয়াসিন আর আমার মধুবালা (২০০৭), কালপুরুষ (২০০৮) ও জানালা (২০০৯) ইত্যাদি।  এছাড়া তিনি ঢোলের রাজা খিরদ নাট্ট (১৯৭৩), ফিসারম্যান অব সুন্দরবন (১৯৭৪) সহ বেশ কয়েকটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন।

২০০৮ সালে স্পেন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বুদ্ধদেবকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়। আর একটি কথা না বললে বুদ্ধদেব সম্পর্কে পরিপূর্ণতা আসবে না। সবার আগে তিনি একজন কবি। গভীর আড়ালে, কফিন কিংবা স্যুটকেস, বারোতার গান, হিমজগ তাঁর অন্যতম কাব্যগ্রন্থ।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন