Magic Lanthon

               

অং রাখাইন

প্রকাশিত ২৫ জুন ২০২৫ ১২:০০ মিনিট

অন্যকে জানাতে পারেন:

নতুন নির্মাতার কথা

‘যে সরকারই আসুক না কেনো আমার ফাইট জারি থাকবে’

অং রাখাইন


নির্মাতা অং রাখাইন চলচ্চিত্র নির্মাণকে পেশা হিসেবে ভাবতে চান না, তার কাছে এটা একটা কমিটমেন্ট ও রেসপন্সিবিলিটি। তাই নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও তিনি গল্প বলার জন্য লড়াইটা করতে চান। মর থেংগারি (মাই বাইসাইকেল) অং রাখাইনের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, এবং এটা বাংলাদেশের প্রথম কোনো আদিবাসী (চাকমা) ভাষায় নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র।

মর থেংগারি এখনো সেন্সর নামের প্রাতিষ্ঠানিক কারাগার থেকে মুক্তি পায়নি, অথচ এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছিলো সেই ২০১২ খ্রিস্টাব্দে। তবে এতে অংয়ের খুব একটা কিছু এসে যায়নি; কারণ তিনি চেয়েছিলেন যেকোনোভাবে এটা মানুষকে দেখাতে। আর সেটা তিনি দেখিয়েছেনও। ২০১৪ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে ঢাকার একটি চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথমবারের মতো এটা প্রদর্শন করা হয়। পরবর্তী সময়ে ঢাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও ফিল্ম ক্লাবগুলোয় চলচ্চিত্রটির অনেকগুলো প্রদর্শনী হয় ঘরোয়াভাবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও এটা প্রদর্শন হয় এবং পুরস্কারও জেতে।

১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দের ২১ অক্টোবর জন্ম নেওয়া অং পাহাড় আর সমুদ্রের মাঝে বেড়ে উঠেছেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় তিনি কখনোই আগ্রহী ছিলেন না। তার শুধু ভালো লাগতো নানারকম ব্যবহারিক কাজকর্ম। তার পরও ঘটনাচক্রে তিনি এস এস সি’র পরে নারায়ণগঞ্জ চারুকলায় ভর্তি হন। সেখানেই তিনি যুক্ত হন কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে‘সমগীত’, ‘প্রাচ্যনাটে’ স্কুলিং করেন, ‘নিমকো’তে (ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ম্যাস কমিউনিকেশন) কোর্স করেন।

নানারকম রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা থেকে দূরে থাকা আদিবাসী রাখাইন জনগোষ্ঠীর সদস্য অং কীভাবে একজন নির্মাতা বনে গেলেন; কেমন ছিলো তার সেই সফর? কীইবা তার জীবনদর্শন, চলচ্চিত্র ও রাষ্ট্রভাবনা, এসব বিষয়ে জানার বা জানানোর জন্য চলতি বছরের জানুয়ারিতে ম্যাজিক লণ্ঠন-এর তরফে মো. তাসবীর হাসান নির্মাতার ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টে যোগাযোগ শুরু করেন। অং প্রথম কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর পাঠান ফেব্রুয়ারিতে। পরবর্তী সময়ে তাকে আরো বেশ কয়েকটি প্রশ্ন পাঠিয়ে রাখলেও শারীরিকভাবে অসুস্থ ও ব্যক্তিজীবনে ব্যস্ত থাকায় উত্তর করতে পারেননি। শেষাবধি গত মার্চের মাঝামাঝি তিনি যে রেকর্ড বার্তাটি দেন তা অনেকটা এ রকম‘অনেক কথা হইছে আমি জানি না ঠিকমতো কথা বলতে পারতেছি কিনা। আমি একটু থানচিতে আছি, নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না এখানে, নেটওয়ার্ক একটু ছিলো বলে আমি আপনাদেরকে পাঠাইছি। সো এতোদূর, আপনারা যদি মনে করেন এটা ছাপানো দরকার, করেন; নাহলে দরকার নাই।’ পরবর্তী সময়ে আবারো তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। সেদিক থেকে এই সাক্ষাৎকারটি অসম্পূর্ণই থেকে গেছে।


ম্যাজিক লণ্ঠন : আপনি প্রথম সিনেমাতে নিজ জাতিগোষ্ঠীর গল্পটাই বললেন, অবশ্যই এটা দারুণ ব্যাপার! কিন্তু এর পেছনে কি কোনো কারণ আছে?


অং রাখাইন : আপনার হয়তো ভুল হচ্ছে, আমি প্রথম সিনেমা বানাচ্ছি মাই বাইসাইকেল যেটা চাকমা ভাষায়। কিন্তু আমি বেসিক্লি রাখাইন জনগোষ্ঠীর। এটা চাকমা ভাষায় বানানোর পেছনে একটা কারণ আছে, বাংলাদেশের আদিবাসীদের মধ্যে চাকমা জনগোষ্ঠী হচ্ছে বৃহত্তর এবং এই জনগোষ্ঠীর ওপর অনেক নির্যাতন, নিপীড়ন করা হয়েছে। এবং একমাত্র চাকমা জনগোষ্ঠী মুভমেন্টের মধ্য দিয়ে অনেক কিছু অর্জন করেছে, বুঝলেন! সেক্ষেত্রে এটা জাস্ট চাকমা জনগোষ্ঠীকে অ্যাপ্রিশিয়েট করার মতো একটা বিষয় বলা যায়! আর সেটা আমি করেছি আমার প্রথম কাজ দিয়ে। আমি মনে করি, চাকমা জনগোষ্ঠী যদি এদেশে না টিকে থাকে, তাহলে অন্যান্য ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী টিকে থাকবে না। কারণ চাকমা অন্যান্য জনগোষ্ঠীকে লিড দেয়।


ম্যাজিক লণ্ঠন : মর থেংগারির গল্পটা আপনার মনে কীভাবে এলো? এই জার্নির গল্পটা যদি বলতেন?

অং : রাঙামাটিতে একটা পার্সোনাল এক্সপেরিয়েন্স ছিলো আমার; কোনো একটা গ্রামে মোটরসাইকেল এসেছিলো; তার পেছনে অনেক বাচ্চাকাচ্চা ছুটছে, মানুষের অনেক কৌতূহল! আমি জাস্ট সেটাকে বাইসাইকেলে রূপান্তর করেছি। আমি যখন ২০০০ সালে রাঙামাটি থেকে এস এস সি পরীক্ষা দিলামরাঙামাটির আরো ভেতরে, বেসিক্লি যক্ষাবাজার থেকে দিছিলাম আরকি। ওইখানে আমি দেখলাম একটা মোটরসাইকেল আসছে, সেটা নিয়ে মানুষের কৌতূহল অনেক। ওখান থেকেই মূলত প্রথম আইডিয়াটা এসেছিলো। তার পর তাদের মুভমেন্ট, তাদের কালচার, ধর্মীয় মুভমেন্ট সবকিছুর দিকে আমি খেয়াল রেখেছি। এছাড়া কাপ্তাই লেক, তাদের পলিটিকাল মুভমেন্ট, এখন যে সিচুয়েশন, তখনকার যে সিচুয়েশন। সবমিলে আমি একটা সিম্পল স্টোরি টেলিং করতে চেয়েছিলাম। যেটার মধ্য দিয়ে যেনো হিল ট্র্যাক্সের একটা চিত্র ফুটে ওঠে।


২০০৩-এ যখন আমি নারায়ণগঞ্জ চারুকলায় পড়া শুরু করি২০০৩-২০০৫ আমি মাই বাইসাইকেল-এর স্ক্রিপ্ট লেখা শুরু করি। মানে আমি তো আগে ইন্ডাস্ট্রিতে কোনো কাজ করি নাই; আমার মতো করে একটা গল্প লেখা শুরু করি আরকি! তারপরে আমি ইউডা [ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ] চারুকলায় আসি, প্রাচ্যনাটে কর্মী হিসেবে যোগ দিই, থিয়েটার করি। তারও পরে ‘নিমকো’তে অ্যাপ্রেসিয়েশন কোর্স করার মাধ্যমে আমি আসলে অডিও-ভিজ্যুয়ালের দিকে ধীরে ধীরে মনোযোগ দিই আরকি। মূলত টার্গেট ছিলো ফিল্মমেকিং করা; ফলে এর সমস্ত কলাগুলোকে শেখার প্রয়োজন মনে হলো, তখন আমি আস্তে আস্তে এগুলো শিখতে থাকি। এর মধ্যে হঠাৎ করে ২০১৪-তে, না ২০১২ বা ২০১৩-তে নির্মাতা নূরুল আলম আতিকের সঙ্গে আমার কাজ করার একটা সুযোগ হয়। তারপর ওনার মধ্য দিয়েউনি এক অর্থে আমার ওস্তাদ, এক অর্থে আমার বড়োভাই, বন্ধু এবং ব্লাড রিলেশনের চেয়েও বেশি কিছু, মানে তার সঙ্গে আমার একটা ফ্যামিলি রিলেশন আছে। এর পর ২০১২-তে আমি বেসিক্লি মাঠে নামি। শ্যুট করি। শ্যুট করার পরে প্রায় দুই বছর ধরে আমি এডিট করি। ২০১৪-তে শর্টফিল্ম ফোরামের ফেস্টিভালে আমি এটা প্রিমিয়ার করি। দ্যান এই জার্নি আরকি; ফেস্টিভাল জার্নি এবং সবকিছু মিলে।

অং রাখাইন পরিচালিত মাই বাইসাইকেল চলচ্চিত্রের পোস্টার


ম্যাজিক লণ্ঠন : আপনি যখন এই সিনেমা বানাচ্ছেন, তখন তো আওয়ামী শাসন চলছিলো! আপনি কি জেনেশুনেই কাজটি করেছিলেন? মানে আপনি কি আগে থেকে আশঙ্কা করতে পেরেছিলেন, এটা সেন্সর পাবে না?


অং : দেখেন এটা আওয়ামী লীগ বলে কথা নয়, যে সরকারই আসুক না কেনো আমার ফাইট জারি থাকবে। আমার ফাইট হচ্ছে দেশের সব নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর হয়ে কাজ করা। আমি জানতাম, যে সিনেমাটা বানাচ্ছি, তা নিয়ে কোনো একটা ক্রাইসিস হবে, কোনো একটা ঝামেলা হবে। কিন্তু আমার টার্গেট ছিলো, এটা জাস্ট প্রিমিয়ার করে মানুষকে জানানো। তাদেরকে এটা জানানো যে, এ রকম একটা সিনেমা হয়েছে। এটা কমার্শিয়াল না; অল্টারনেটিভ বলা যায়, ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে অল্টারনেটিভ। শুধু জানান দিতে চেয়েছি, অন্য ভাষাভাষীর সিনেমাও এদেশে করা সম্ভব।


মাই বাইসাইকেল ইস্যুটা হচ্ছে, এটা কিন্তু খুব ভালো সিনেমাও না, খারাপ সিনেমাও না। কিন্তু এটা খুবই একটা ইম্পরট্যান্ট সিনেমা। এদেশের জন্য একটা ইম্পরট্যান্ট সিনেমা। এদেশের জন্য একটা রেফারেন্স, একটা এক্সামপল, একটা ইতিহাস। একটা মাই বাইসাইকেল হয়ে ওঠার পেছনে অনেকগুলো মানুষ জড়িত আছে। এবং এটা হওয়ার পরে আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অনেক ছেলেমেয়ে ফিল্মমেকিংয়ে এসেছে। তারা ফিল্মকে ইন্ডাস্ট্রি এবং ইন্টারন্যাশনাল পর্যায়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে এখনো। এটা আমি খুবই প্রাউডলি বলতে পারি।


মাই বাইসাইকেল ইস্যুটা হচ্ছে, আমি মনে করি কোনো পলিটিকাল গ্রুপের বিষয় না। এটা হচ্ছে আসলে আপনারা জানেন, আমরা আর্মিদের নিয়ে কথা বলতে খুব অপছন্দ করি! আগে থেকে আমরা সেল্ফ সেন্সর হয়ে যাই। কিন্তু আমি এগুলো নিয়ে ডোন্ট কেয়ার। আমি কোনো কেয়ার করি না। আমি ভবিষ্যতেও ধরেন পলিটিকাল না হলেও মানে আপনি যদি মাইনোরিটি নিয়ে কাজ করেন, সেটা আরো পলিটিকাল। মাইনোরিটি ভাষা বা বাংলা ভাষার বাইরে অন্য ভাষা নিয়ে কথা বলেন, সেটাও কিন্তু পলিটিকাল ইস্যু হয়ে দাঁড়ায় আমাদের এই দেশে। সো, দেখা যাক এই আরকি।


ম্যাজিক লণ্ঠন :  আপনি চাকমা না হলেও একজন আদিবাসী হিসেবে চলচ্চিত্রের চরিত্রগুলোর সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কতোটা ঘনিষ্ঠ, মানে আপনার শৈশব বা বেড়ে ওঠার গল্পটা যদি বলতেন?


অং : আপনি হয়তো জানেন কিনা চাকমাদের ভাষা চাটগাঁইয়া ভাষার সিমিলার, মানে ফিফটি-ফিফটি আরকি। চাটগাঁইয়া যে বুঝতে পারে চাকমা ভাষাও সে বুঝতে পারে। আমি যেটা করি ক্যারেক্টারের বোঝাপড়ার চাইতে পুরো বিষয়টাতে বেশি প্রায়োরিটি দিই; তার মানে হলো সিনেমা বানানোর ক্ষেত্রে আমি ক্যারেক্টারদের খুব বেশি প্রায়োরিটি দিই না। যেমন ধরেন, ন্যাচার’কে আমি খুব বেশি প্রায়োরিটি দিই; অ্যাক্টিংয়ের চাইতে অ্যাটিচ্যুডটাকে আমি বেশি প্রায়োরিটি দিই। মানে ক্যারেক্টারের অ্যাক্টিং কতো ভালো, তার চেয়ে তার অ্যাটিচ্যুড ঠিকঠাক আছে কিনা। আমি যে ক্যারেক্টারকে বিলং করি বা যে ক্যারেক্টার ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি, তার অ্যাটিচ্যুডটা আসছে কিনা সেটাই বড়ো কথা। মানে অ্যাক্টিং আমার জন্য খুবই বিপদ, আমি অ্যাক্টিং করাতে চাই না, অ্যাটিচ্যুড প্লে করাতে চাই।


শৈশব থেকে বেড়ে ওঠা বলতে, আমি তো গ্রামে বড়ো হয়েছি। তবে ছোটোবেলা থেকে সেখানে কালচারাল মুভমেন্টের সঙ্গে ছিলাম। আমাদের ছোটোবেলায় এখানে বিভিন্ন গানবাজনা হতো; মানে রাখাইনদের আরকি; বিভিন্ন স্টেজ প্রোগ্রাম হতো। পারতপক্ষে গ্রামের ওই সব কালচারাল প্রোগ্রামের সঙ্গে আমি এটাচ্ থাকতাম, সেটা দূরে হোক আর কাছে হোক, সঙ্গে থাকতাম।


ম্যাজিক লণ্ঠন : আপনি ২০০০ খ্রিস্টাব্দে এস এস সি আর পরে নারায়ণগঞ্জ চারুকলায় পড়ার কথা বলছিলেন, যদি আরেকটু বিস্তারিত বলতেন আপনার অ্যাকাডেমিক পড়াশোনার বিষয়ে?


অং : আমি আসলে কখনোই পড়ালেখায় মনযোগী ছিলাম না। পড়ালেখা আমার কাছে খুবই বিরক্ত লাগে। যেকোনো প্রাক্টিকাল কাজ ভালো লাগে আমার। হঠাৎ করেই আমি ২০০৩-এ নারায়ণগঞ্জ চারুকলায় পড়ার সুযোগ পাই। ওখান থেকে আমার কালচারাল অ্যাক্টিভিটিস আরো বেড়ে যায়। ওখানে ‘সমগীত’ নামে একটা অর্গানাইজেশন আছে; সমগীত সংস্কৃতি প্রাঙ্গণের সঙ্গে যুক্ত হই। সঙ্গে ‘প্রাচ্যনাটে’ স্কুলিং শুরু করি আমি; অ্যাক্টিং স্কুলিং। আমি নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় মগবাজারে প্রাচ্যনাটে ক্লাস করতে যেতাম। আর অন্যদিকে ছিলো সমগীত। তখন আবার ধরেন ছাত্র ফেডারেশনের সঙ্গেও একটু করে যোগাযোগ হলো। সবদিক মিলে আমার জন্য ওই সময়টা তখন খুবই ইম্পরট্যান্ট হয়ে ওঠে আরকি! চারদিকে কালচারাল, পলিটিকাল মুভমেন্ট চলে, সেই মুভমেন্টের মধ্য দিয়ে আমার নিজেকে তৈরি করার একটা সুযোগ আসে। এর পর আমি নারায়ণগঞ্জ চারুকলা থেকে ইউডা চারুকলায় ভর্তি হই। প্রাচ্যনাটে পার্মানেন্টলি জয়েন করি। এর মধ্যে আমি নিমকোতে একটা কোর্স শুরু করি।


ম্যাজিক লণ্ঠন : আপনি বলছিলেন, ‘যে সরকারই আসুক আপনার ফাইট জারি থাকবে’। তাহলে আপনি কি চলচ্চিত্রকে কেবল একটি লড়াই জারি রাখার মাধ্যম হিসেবেই বেছে নিলেন? অন্যভাবে বললে, আপনি চলচ্চিত্র নির্মাণে এলেন কেনো? আপনার চলচ্চিত্র বানানোর প্রাথমিক উদ্দেশ্য কী?


অং : আমি বলেছি, যে সরকারই আসুক না কেনো ফাইট চলতেই থাকবেকালচারাল মুভমেন্টের অংশ হিসেবে সিনেমাপ্রেমিক হোক, ফিল্মমেকার হোক কিংবা আর্টিস্ট, ফটোগ্রাফার যাইহোক ফাইট জারি থাকবে। কেননা নিপীড়িত মানুষের কথা যদি বলেন সেটা সরকার সহ্য করে না, ওকে? আর যদি বলি, আদিবাসীদের নিয়ে আপনি যে কাজই করতে চান সেটা সরকারের জন্য বিপদ; কারণ প্রত্যেকটা ভাষার একটা পলিটিকাল পয়েন্ট অব ভিউ আছে, রাইট? ফলে আমি ওইদিক থেকে এটা বলেছি।


আর সিনেমা বানানো আমার জন্য কমিটমেন্ট, একইসঙ্গে রেসপন্সিবিলিটি। সিনেমা বানানো আমার প্রফেশন নয়, ওকে? আমি বার বার করে বলছি, সিনেমা বানানো আমার জন্য একটা কমিটমেন্ট, একটা রেসপন্সিবিলিটি। সেটা জাতিগোষ্ঠীর মাধ্যমে হোক, দেশের হোক, সেটা আমাদের ফ্যামিলির মধ্যে হোককমিটমেন্ট এবং রেসপন্সিবিলিটি। আমি কি বোঝাতে পারলাম? সিনেমা বানানো আমার নেশা, পেশাও নয়। আমার দায়িত্ব ও কর্তব্যের জায়গা থেকে আমি সিনেমা বানাই।


মো. তাসবীর হাসান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষ, প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী।

https://www.facebook.com/nibirsajeeb?mibextid=ZbWKwL

tasbirhasan2004@gmail.com

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন